ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) কর্তৃক জুমার খুতবা নির্ধারণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। আজ বুধবার এই রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জুলফিকার আলী জুনু।
রিটে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক নির্ধারিত খুতবা অবৈধ ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে রুল জারির আবেদন করা হয়েছে। এ ছাড়া খুতবা প্রদানে ইমামদের ওপর সরকার যাতে কোনো হস্তক্ষেপ না করে, সেই নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে। ধর্মসচিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ও খুতবা সম্পাদনা পরিষদকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
আবেদনকারী জুলফিকার আলী জুনু জানিয়েছেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) রিটটি শুনানির জন্য উত্থাপন করবেন। আবেদনের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে থাকবেন ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও ৪১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার প্রত্যেক নাগরিককে দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় গত ২২ জুলাই ইসলামিক ফাউন্ডেশন ইমামদের অনুসরণের জন্য একটি খুতবা প্রকাশ করে।
ইফার সম্পাদনা পরিষদ কর্তৃক প্রকাশিত এই খুতবায় উল্লেখ করা হয়েছিল, আগামী শুক্রবার (২২ জুলাই) বায়তুল মসজিদে পঠিতব্য খুতবা সকল মসজিদে অনুসরণের জন্য অনুরোধ করা হলো। কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী এটা তারা করতে পারেন না। যা সংবিধান প্রণীত ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী। এর আগে গত ইফা কর্তৃক লিখিত জুমার নামাজের খুতবা বাতিল করতে ২৫ জুলাই সরকারকে আইনি নোটিশ দেন জুলফিকার আলী জুনু।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি কিছু পত্র পত্রিকা ও মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি জুমার নামাজের নির্দিষ্ট খুতবা ইসলামিক ফাউন্ডেশন নির্ধারণ করে দিয়েছে। সরকারের অনেক মন্ত্রী বলছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের খুতবার বাইরে কোনো ইসলামী বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে মসজিদের খতিবদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা হবে। যা ধর্মপ্রাণ মুসলমানের জন্য তথা মসজিদের খতিবদের জন্য অপমানজনক ও সরাসরি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের শামিল। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, নোটিশের মাধ্যমে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিম উম্মাহর ধর্মীয় অনুভূতির স্বার্থে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক নির্ধারিত খুতবা বাতিল পূর্বক মসজিদের খতিবদের কুরআন ও হাদিসের আলোকে খুতবা প্রদানের স্বাধীনতা প্রদানের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
অথবা ইফার উক্তরূপ সিদ্ধান্ত এবং খুতবা নির্ধারণ করে দেওয়া কেন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের শামিল হবে না এবং কেন তা অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা লিগ্যাল নোটিশ প্রাপ্তির ৭ দিনের মধ্যে দেশবাসীর কাছে মিডিয়ার মাধ্যমে জানানোর এবং লিখিত আকারে লিগ্যাল নোটিশের উত্তর প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো। তবে এ পর্যন্ত বিবাদীরা কোনো জবাব না দেওয়ায় আজ বুধবার এই রিট দায়ের করা হয়।
পাঠকের মতামত: